শেয়ার-নেট বাংলাদেশ নগরীর সিক্স সিজনস হোটেলে ‘যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার’ শীর্ষক এক দিনব্যাপী নলেজ ফেয়ারের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানটি সমন্বয় করছে যৌথভাবে রেড অরেঞ্জ মিডিয়া অ্যান্ড কম্যুনিকেশনস ও জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।
এই নলেজ ফেয়ারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব হাসানুল হক ইনু । তিনি এই নলেজ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তথ্য প্রবাহের ভিত্তিতে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার ইস্যুটিকে সামনে আনাোচনায় ষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন।
শেয়ার-নেট বাংলাদেশ শেয়ার-নেট ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ শাখা যা একটি নলেজ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এই প্ল্যাটফর্মটির উদ্দেশ্য হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই খাতে ফলপ্রসূ কৌশল ও নীতি নিরূপণ করা।
অনুষ্ঠানটিতে বাংলাদেশে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার নিয়ে কর্মরত সংস্থাগুলোকে নিয়ে আলোচনার আয়োজন করেছে শেয়ার-নেট বাংলাদেশ। এতে বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত ও ফলাফল নিয়ে আলোচনা করা হয় যাতে করে জ্ঞানের পারস্পরিক আদানপ্রদানের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প ও প্রতিষ্ঠান তাদের কৌশল ও নীতির বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইতিবাচক পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে।
নলেজ ফেয়ারে যোগ দিচ্ছেন দুই শতাধিক অংশগ্রহণকারী এবং অর্ধশতাধিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান। এই সকল সংস্থা পোস্টার উপস্থাপনের মাধ্যমে নিজেদের কাজের পরিধি, গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল ইত্যাদি অন্যদের জানানোর সুযোগ পাচ্ছেন।
এই নলেজ ফেয়ারে তিনটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। তিনটি সেশনে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেন অংশগ্রহণকারীরা। বিষয়গুলো হচ্ছে, বাল্য বিবাহ, যৌন সহিংসতা এবং মাসিক নিয়মিতকরণ।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিশ্ব গণমাধ্যম দিবসে এমন একটি আয়োজন করার জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন এ সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করার অধিকার দেশের সকল নাগরিকের রয়েছে। যদি কোন মৌলবাদী ব্যক্তি বা দল এ নিয়ে হয়রানী করতে চায়, তবে রাষ্ট্র নাগরিকদের পাশে দাঁড়াবে।
এ ছাড়াও তিনি বয়ঃসন্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন ও সম্মান, বৈবাহিক ধর্ষণ ইত্যাদি ইস্যু আলচনায় নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, এ সকল বিষয়ে জনগণকে তথ্য প্রদান করা দরকার। তিনি ও তাঁর সরকার এ বিষয়ে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের মাননীয় হেড অব মিশন মারতিনো ভ্যান হুগস্ত্রাতেন তাঁর বক্তব্যে বলেন, তিনি অত্যন্ত আনন্দিত ও সম্মানিত বোধ করছেন যে দূতাবাস শেয়ার-নেটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে কাজ করছে।
বাংলাদেশে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার নিশ্চিত করতে নেদারল্যান্ডস সরকার বাংলাদেশকে ভবিষ্যতেও সহযোগিতা করবেন বলে জানান তিনি।
এছাড়াও উপস্থিতছিলেন শেয়ার নেট ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি কোঅরডিনেটর ক্যারেন হোফট। তিনি শেয়ার-নেট ইন্টারন্যাশনালের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি জানান, শেয়ার-নেট ইন্টারন্যাশনাল কিভাবে শেয়ার-নেট বাংলাদেশের সঙ্গে সহায়ক ভুমিকায় থেকে যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
রেড অরেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অর্ণব চক্রবর্তী বলেন, এই দিনটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, কেননা, বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় তথ্যমন্ত্রী যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার নিয়ে আজকের এই আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন। এটা প্রমাণ করে, বাংলাদেশ সরকার এ দেশে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার নিশ্চিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগের পাশে দাঁড়াবে। এই প্রাপ্তি সামান্য নয়। এই প্রাপ্তি এ দেশে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের এসআরএইচআর ও জেন্ডার বিষয়ক ফার্স্ট সেক্রেটারি ডঃ আন্নি ভেসচেন এই ফেয়ারে তাঁর সমাপনী বক্তব্য রাখেন।
এই আয়োজনের মাধ্যমে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার বিষয়ে কর্মরত সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে একত্রে একে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছে শেয়ার-নেট বাংলাদেশ।
পাঠকের মতামত: